বাংলাদেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়, যা সঠিকভাবে অনুসরণ করে আপনি সহজেই লাইসেন্স অর্জন করতে পারেন। নিচে ধাপে ধাপে এই প্রক্রিয়ার বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলো:
শিক্ষানবিশ (লার্নার) ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রহণ:
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- নির্ধারিত আবেদন ফরম: বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এর ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফরম ডাউনলোড করে তা পূরণ করতে হবে।
- মেডিকেল সার্টিফিকেট: নিবন্ধিত চিকিৎসকের কাছ থেকে মেডিকেল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে, যেখানে দৃষ্টিশক্তি, রঙ চেনার ক্ষমতা, শ্রবণ ক্ষমতা ও শারীরিক সক্ষমতা সম্পর্কে তথ্য থাকবে।
- ন্যাশনাল আইডি, জন্ম সনদ বা পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি: আপনার পরিচয় প্রমাণের জন্য এই ডকুমেন্টগুলোর সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।
- ফি জমাদানের রশিদ: বিআরটিএ’র নির্ধারিত ব্যাংকে ৩৪৫ টাকা ফি জমা দিয়ে রশিদ সংগ্রহ করতে হবে।
- ছবি: সদ্য তোলা ৩ কপি স্ট্যাম্প সাইজ ও ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি জমা দিতে হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া:
- উপরোক্ত কাগজপত্রসহ বিআরটিএ’র সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে।
- আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর, আপনাকে শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা হবে, যা দিয়ে আপনি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন।
ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ গ্রহণ:
শিক্ষানবিশ লাইসেন্স পাওয়ার পর, আপনি বিআরটিএ বা অন্যান্য স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে ২-৩ মাসব্যাপী ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন। এই প্রশিক্ষণ আপনাকে সড়ক নিরাপত্তা ও যানবাহন চালনার দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করবে।
পরীক্ষায় অংশগ্রহণ:
- প্রশিক্ষণ শেষে, আপনাকে বিআরটিএ কর্তৃক নির্ধারিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে, যা তিনটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়:
- লিখিত পরীক্ষা: সড়ক পরিবহন আইন ও যানবাহন সম্পর্কিত সাধারণ জ্ঞান পরীক্ষা।
- মৌখিক পরীক্ষা: লিখিত পরীক্ষার পর মৌখিক প্রশ্নোত্তর।
- ফিল্ড টেস্ট: বাস্তব পরিবেশে যানবাহন চালিয়ে দক্ষতা প্রদর্শন।
স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু:
পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে, নিম্নলিখিত কাগজপত্রসহ স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে:
- আবেদন ফরম: নির্ধারিত ফরমে আবেদন।
- মেডিকেল সার্টিফিকেট: পুনরায় রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের দেওয়া।
- পরিচয় প্রমাণ: ন্যাশনাল আইডি, জন্ম সনদ বা পাসপোর্টের সত্যায়িত কপি।
- ফি জমাদানের রশিদ: নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে রশিদ।
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি: সদ্য তোলা ১ কপি।
ফি সমূহ:
- শিক্ষানবিশ লাইসেন্স: ৩৪৫ টাকা।
- স্মার্টকার্ড অপেশাদার লাইসেন্স: ২,৩০০ টাকা।
- স্মার্টকার্ড পেশাদার লাইসেন্স: ১,৪৩৮ টাকা।
সেবা প্রাপ্তির সময়সীমা:
সাধারণত, শিক্ষানবিশ লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ৮০-৯০ দিন সময় লাগে।
স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ:
স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু হওয়ার পর, আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হবে। টেম্পোরারি লাইসেন্সের মাধ্যমে আপনি মূল লাইসেন্স সংগ্রহ করতে পারবেন।
নিরাপত্তা ও আইন মেনে চলা:
ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির পর, সড়ক নিরাপত্তা বিধি ও ট্রাফিক আইন মেনে চলা আবশ্যক। এতে আপনার ও অন্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
সতর্কতা:
লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া ও ফি সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে। সর্বশেষ ও সঠিক তথ্যের জন্য বিআরটিএ’র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা স্থানীয় অফিসে যোগাযোগ করুন।
0 মন্তব্যসমূহ